ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন! দারুল উলূম দেওবন্দের প্রখ্যাত শাইখুল হাদিস, ইসলামী পণ্ডিত ও সূফি চিন্তাবিদ মাওলানা কামরুদ্দিন আহমদ গোরখপুরী আজ ভোরে (২২ ডিসেম্বর ২০২৪) ৮৬ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহ শোকাহত।
মাওলানা কামরুদ্দিন আহমদ ১৯৩৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর জেলার বারহালগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তাঁর মধ্যে ধর্মীয় জ্ঞানার্জনের প্রতি গভীর আগ্রহ দেখা যায়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন ইহইয়াউল উলূম মুবারকপুর এবং দারুল উলূম মউ থেকে। এরপর ১৯৫৪ সালে দারুল উলূম দেওবন্দে ভর্তি হন। এখানে তিনি হাদিস, ফিকহ ও তাফসির শাস্ত্রের উপর গভীর পড়াশোনা করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি দেওবন্দ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
তাঁর শিক্ষা ও জ্ঞানার্জনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন উপমহাদেশের কিংবদন্তি আলেম হুসাইন আহমদ মাদানি, সাইয়্যেদ ফখরুদ্দীন আহমদ এবং ইবরাহিম বালিয়াভি। তিনি ছিলেন একজন চিন্তাশীল ও কর্মঠ ব্যক্তি, যিনি ইসলামের মূল শিক্ষা ও সুফিবাদের প্রচার ও প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।
মাওলানা কামরুদ্দিন আহমদ ১৯৫৯ সালে শিক্ষকতা শুরু করেন এবং প্রায় ছয় দশক ধরে ইসলামী জ্ঞানের আলো ছড়িয়েছেন। দারুল উলূম দেওবন্দে তিনি বহু শিক্ষার্থীকে কুরআন, হাদিস ও ইসলামি আইনশাস্ত্রে উচ্চতর শিক্ষা প্রদান করেন। তাঁর জীবনব্যাপী শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে তিনি মুসলিম উম্মাহর উন্নতিতে অবদান রেখেছেন।
মাওলানা কামরুদ্দিন আহমদ ছিলেন হুসাইন আহমদ মাদানি রহিমাহুল্লাহর ঘনিষ্ঠ শাগরেদ এবং শাহ আবরারুল হক হারদুয়ী রহিমাহুল্লাহর খলিফা। তিনি শুধু একজন শিক্ষকই নন, বরং একজন পথপ্রদর্শক এবং সুফি ধ্যানের অনুশীলক ছিলেন।
তাঁর ইন্তেকালে ইসলামী জগত এক মহান আলেমকে হারাল। রাব্বুল আলামিন তাঁর কবরকে জান্নাতুল ফেরদাউসের টুকরো বানিয়ে দিন এবং তাঁর পরিবার ও মুসলিম উম্মাহকে ধৈর্য ধারণের তৌফিকদিন। আমিন।