শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশে সহিংসতা শুরু হলে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ভুয়া পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে, যেগুলোতে দাবি করা হয় যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চলছে। এ পরিস্থিতিতে, ভারতের সরকার বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে। পাশাপাশি, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য একটি হটলাইন চালু করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
যদিও হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ভুয়া খবরগুলো মূলত ভারতীয় অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে বলে ফ্যাক্ট-চেকাররা নিশ্চিত করেছেন, তবুও বাংলাদেশের ভেতর থেকেও এ ধরনের গুজব রটানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফ্যাক্ট-চেকের মাধ্যমে জানা গেছে, হামলার আসল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ও সম্পত্তি, ধর্মীয় পরিচয় নয়।
বিভ্রান্তিকর ভুয়া পোস্টগুলোর বেশিরভাগই ভারতের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে, যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করা। এদিকে, কিছু ভারতীয় ইনফ্লুয়েন্সার এই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করার জন্য বিভ্রান্তিকর ভিডিও শেয়ার করেছেন, যাতে দেখানো হয়েছে যে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন চলছে। তবে ফ্যাক্ট-চেকিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এসব ঘটনার বেশিরভাগই ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক।
ফ্যাক্ট-চেকারদের মতে, কিছু আক্রমণমূলক ঘটনা ঘটেছে, তবে তা প্রধানত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং আওয়ামী লীগের কর্মীদের লক্ষ্য করে করা হয়েছে, যেখানে ধর্মীয় পরিচয় কোনো বড় ফ্যাক্টর ছিল না। ভারতের দক্ষিণ-পন্থী কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে সাম্প্রদায়িক বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
ফলে, এটি স্পষ্ট যে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার যে আখ্যান তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা ভুয়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাস্তব পরিস্থিতি ছিল রাজনৈতিক সহিংসতা, যেখানে হামলাকারীদের প্রধান লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের।