Search
Close this search box.

সোয়া ৯ লাখ টাকায় বিক্রি হলো ৩০ কেজির কালো পোপা

বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজারের টেকনাফ অংশে ধরা পড়েছে ৩০ কেজি ওজনের একটি কালো পোপা (স্থানীয় ভাষায় পোয়া) মাছ। কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ী শামীম আহমেদ মনো নামের এক ব্যবসায়ী শুক্রবার সন্ধ্যায় মাছটি ৯ লাখ ২০ হাজার টাকায় কিনেছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন হাজারী।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাবিবপাড়ার বাসিন্দা ও সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় সৈয়দ আহমদের ট্রলারের জালে মাছটি ধরা পড়ে বলে জানিয়েছেন শামলাপুর নৌ ঘাটের জেলে কমিটির সভাপতি মাঝি সিরাজুল ইসলাম।

তিনি জানান, শুক্রবার বেলা ১টার দিকে বাহারছরা নৌ-ঘাটে ৩০ কেজি ওজনের একটি কালো পোপা মাছ এনে বোটের জেলেরা দাম হাঁকান সাড়ে সাত লাখ টাকা। এ খবর এলাকায় ছড়ালে মাছটি দেখতে মানুষ ভিড় করেন।

সৈয়দ আহমদের ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, পেটের দায়ে শুক্রবার সকালে মাছ ধরার জন্য সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া থেকে পাঁচ মাঝিমল্লাসহ ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরে রওনা দেই আমরা। এর মাঝে বারো বাইন নামের এলাকায় গিয়ে জাল ফেলা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ একটি বড় কালো পোপা মাছ আটকা পড়ে। মাছটি জালে ধরা পড়ার পর জেলেরা বেজায় খুশি।

ট্রলার মালিক সৈয়দ আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, মাছটি সাড়ে সাত লাখ টাকা দাম চাওয়া হয়েছিল। পরে ৪ লাখ টাকায় মাছটি কিনে নেন মো. ইউনুস নামের এক মাছ ব্যবসায়ী।

শাপলাপুরের বাসিন্দা মো. ইউনুস বলেন, শুক্রবার দুপুরে টেকনাফের সাবরাং বাহারছড়া ঘাটে একটি ৩০ কেজি ওজনের কালো পোপা মাছ ৪ লাখ টাকায় কিনেছি। পরে মাছটি কক্সবাজার ফিশারি ঘাটে এনে ১২ লাখ টাকা দাম দিয়েছিলাম। কয়েক ব্যবসায়ী দর কষাকষি করে ৯ লাখ টাকার উপর উঠছিল না। পরে মনো সওদাগর নামে এক ব্যবসায়ীকে ৯ লাখ ২০ হাজার টাকায় মাছটি হস্তান্তর করে দিয়েছি।

এদিকে সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। আগামী ২৩ জুলাই এ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হবে। এর মধ্যে পেটের দায়ে অনেকে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ট্রলারে করে সাগরে মাছ শিকার করছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বীকার করেছেন কয়েকজন ট্রলার মালিক।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর হোসেন বলেন, পারিবারিক কাজে উপজেলার বাইরে রয়েছি। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় অধিকাংশ নৌযান সাগর থেকে নিরাপদ স্থানে তুলে রাখা হয়েছে। জানা মতে, কোন নৌযান মাছ শিকারে যাওয়ার কথা নয়। তবে ৩০ কেজি ওজনের একটি কালো পোপা মাছ ধরা পড়ার খবর শুনেছি। এসব মাছ সবসময় জালে ধরা পড়ে না। ভাগ্য সহায় হলে কারো কারো জালে উঠে আসে।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, পোপা মাছের বায়ুথলী দিয়ে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি করা যায়। তাই বিভিন্ন দেশে এই মাছের চাহিদা প্রচুর। এর বৈজ্ঞানিক নাম মিকটেরোপারকা বোনাসি (Mycteroperca bonaci)। বায়ুথলী বেশ মূল্যবান বলে পোপা মাছের দামও বেশি পাওয়া যায়।

শুক্রবারের এ পোপা মাছ ধরা পড়ার বিষয়ে জানতে টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।