Search
Close this search box.

ব্যাংক খাতে নতুন অস্থিরতা: মালিকানা নিয়ে বিক্ষোভে উত্তাল ব্যাংকগুলো, আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক

দেশের ব্যাংক খাতে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার পতনের পর থেকে ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনসহ নানা দাবিতে বিভিন্ন ব্যাংকে আন্দোলন শুরু হয়েছে, যা সহিংস রূপ নিচ্ছে। এই অস্থিরতায় সাধারণ আমানতকারীরা বিপাকে পড়েছেন এবং অনেকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন। তবে ব্যাংক থেকে দৈনিক নগদ দুই লাখ টাকার বেশি উত্তোলনের বিধিনিষেধ তাদের আরও অসুবিধায় ফেলছে। এদিকে, এটিএম বুথগুলোতে নগদ টাকার সংকট দেখা দিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।

ইসলামী ব্যাংকসহ বেশ কিছু ব্যাংকে মালিকানা পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। এসব বিক্ষোভের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ব্যাংকের কর্মকর্তারা পর্ষদ পুনর্গঠন ও ব্যাংক থেকে দুর্নীতিবাজদের বের করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পরিস্থিতির অবনতির ফলে ইসলামী ব্যাংকের পুরনো কর্মীরা ব্যাংকের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রবেশে বাধা দিচ্ছেন এবং গুলির ঘটনার বিচারও দাবি করছেন।

অন্যান্য ব্যাংকেও মালিকানা নিয়ে অসন্তোষ ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে। সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অস্ত্রধারীদের মহড়া দেখা গেছে, যা ব্যাংক কর্মী ও গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে, আইএফআইসি ব্যাংকের শীর্ষ পরিচালকদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে। এছাড়াও ইউসিবি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংকসহ বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ব্যাংক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, সংকট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা দুই লাখ টাকা রাখার ফলে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন। বিশেষ করে মাস শেষে কর্মীদের বেতন দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এই সংকট সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, নিরাপত্তার কারণে ব্যাংক থেকে নগদ উত্তোলনে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে এবং এটিএম বুথে হামলার আশঙ্কায় টাকার সরবরাহ কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হলে এই বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। এছাড়া, ইসলামী ব্যাংকের দখল নিয়ে সংঘাত ও গোলাগুলির ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই অস্থিরতা দেশের আর্থিক খাতে আস্থার সংকট তৈরি করেছে, যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।