Search
Close this search box.

পুনরায় চালু হচ্ছে সিটিসেল: ৮ বছর পর ফিরছে বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল অপারেটর

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সিডিএমএ প্রযুক্তির মোবাইল ফোন সেবা নিয়ে আসা সিটিসেল আবারও তাদের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। দীর্ঘ আট বছর বন্ধ থাকার পর, সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে তাদের লাইসেন্স ফেরত চেয়ে আবেদন করেছে। সূত্রমতে, বিটিআরসি ইতোমধ্যে সিটিসেলকে লাইসেন্স পুনর্বহাল করার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

 

১৯৮৯ সালে যাত্রা শুরু করা দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীনতম মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় প্রতিষ্ঠানের বকেয়া বিল, গ্রাহক কমে যাওয়া এবং বিভিন্ন আদালতের আদেশের কারণে তাদের তরঙ্গ স্থগিত করা হয়। সিটিসেলের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (পিবিটিএল) এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, প্রতিষ্ঠানটি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বৈষম্যের শিকার হয়। এর ফলে তাদের বিরুদ্ধে নানা রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়, যা সিটিসেলের বন্ধ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

সিটিসেলের উত্থান ও পতন

১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিএল) নামে সিটিসেলের যাত্রা শুরু হয়। পরে এটি মালিকানার হাতবদলের মাধ্যমে সিটিসেল নামে পরিচিতি পায়। সিডিএমএ প্রযুক্তির একমাত্র অপারেটর হিসেবে, সিটিসেল একসময় দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল অপারেটর ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে প্রায় ৪৭৭ কোটি টাকার বকেয়া বিলের কারণে বিটিআরসি সিটিসেলের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বকেয়া পরিশোধের বিভিন্ন চেষ্টা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি আর কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।

 

সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ

সিটিসেল কর্তৃপক্ষের দাবি, তৎকালীন সরকার ও বিটিআরসি তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। তারা রাজনৈতিক কারণে বৈষম্যের শিকার হয়েছে বলে বিটিআরসিতে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছে। সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল বলে তারা অভিযোগ করেছে। তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সিটিসেল আবারও তাদের কার্যক্রম শুরু করার সুযোগ পাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

লাইসেন্স পুনরুদ্ধার এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

সিটিসেল তাদের সেলুলার মোবাইল ফোন অপারেটর লাইসেন্স পুনরায় পাওয়ার জন্য আবেদন করেছে। একইসঙ্গে তারা ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ২জি, ৩জি, ৪জি এবং ৫জি লাইসেন্সের অনুমোদন চেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের লাইসেন্স ফি এবং অন্যান্য জরিমানা মওকুফ করার আবেদনও জানিয়েছে। সিটিসেল আশাবাদী, পুনরায় কার্যক্রম শুরু করলে তারা দেশের মোবাইল সেবার বাজারে নতুনভাবে ফিরে আসতে সক্ষম হবে।

 

সিটিসেলের ফিরে আসা বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন খাতের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে। দীর্ঘ আট বছর পর পুরনো এই মোবাইল অপারেটর আবারও গ্রাহকদের সেবা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা টেলিযোগাযোগ সেবার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।