ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র এবং ঢাকা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগে তার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সাঈদ খোকন, তার স্ত্রী ফারহানা সাঈদ, এবং বোন শাহানা হানিফের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল ইসলামের স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিও হিসাব অবরুদ্ধ এবং তদন্তের অগ্রগতি
দুদক জানিয়েছে, সাঈদ খোকনসহ তার স্ত্রী ও বোনের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবগুলোতে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তদন্তের স্বার্থে তাদের বিও হিসাবের সব ধরনের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট নথি ও লেনদেন বিবরণী সংগ্রহ করা হচ্ছে।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের আদেশে সাঈদ খোকনসহ তার পরিবারের সদস্যদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের পদের অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রোধ আবশ্যক।
অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধি
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ২০১৫ সালে মেয়র নির্বাচনের সময় সাঈদ খোকনের হাতে নগদ ছিল ১ কোটি ১০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। বর্তমানে তার নগদ অর্থ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর নগদ অর্থ ৩০ লাখ থেকে বেড়ে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এছাড়া সাঈদ খোকনের বন্ড, ঋণপত্র এবং শেয়ারে বিনিয়োগ রয়েছে ৬৫ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
দুর্নীতি এবং সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখা হচ্ছে
দুদক চিঠিতে জানিয়েছে, সাঈদ খোকনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং অন্যান্য প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম ও অর্থ পাচারের বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে।
দুদক বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম গঠন করেছে। এই টিম সাঈদ খোকনের সম্পদ, লেনদেন এবং বিদেশে সম্পদ অর্জনের উৎস খতিয়ে দেখছে। তদন্তে আরও নতুন তথ্য পাওয়ার আশা করা হচ্ছে বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।